,

সালমান শাহের মৃত্যুরহস্য ঘিরে ‘বুকের মধ্যে আগুন’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে রুল

সময় ডেস্ক : প্রয়াত চিত্রনায়ক সালমান শাহের মৃত্যুরহস্য ঘিরে কল্পিত ঘটনা-নির্ভর ওয়েব সিরিজ ‘বুকের মধ্যে আগুন’ হইচইসহ ওটিটি প্ল্যাটফর্মে প্রচার কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. খসরুজ্জামান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল দেন।
হইচই প্ল্যাটফর্মে ‘বুকের মধ্যে আগুন’ ওয়েব সিরিজ নিয়ে প্রয়াত অভিনেতা সালমান শাহর পরিবারের আপত্তির পর সিরিজটি তুমুল আলোচনার জন্ম দেয়। সাধারণ ডায়েরির (জিডি) পাশাপাশি সিরিজটির নির্মাতাকে গত ৫ ফেব্রুয়ারি আইনি নোটিশও পাঠায় সালমানের পরিবার।
নোটিশে দাবি করা হয়, এটি সালমান শাহকে নিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। সিরিজের মুক্তি বন্ধ না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে এতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। তবে সিরিজের নির্মাতা তানিম রহমান দাবি করেছেন, সিরিজের সঙ্গে সালমান শাহর কোনো সম্পর্ক নেই। নোটিশ পাঠিয়ে ফল না পেয়ে সালমান শাহের মা নীলা চৌধুরী গত ১৩ মার্চ হাইকোর্টে রিটটি করেন। এর আগে গত ৩ মার্চ সিরিজটি মুক্তি দেয় হইচই। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী চৌধুরী মুর্শেদ কামাল টিপু, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এ কে খান উজ্জ্বল। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
পরে আইনজীবী চৌধুরী মুর্শেদ কামাল টিপু বলেন, ‘সালমান শাহ মৃত্যুর রহস্য এখনো উদ্ঘাটিত হয়নি, মামলাটি বিচারাধীন। বিচারাধীন কোনো বিষয় নিয়ে কোনো কল্পিত ঘটনা-নির্ভর কোনো কিছু প্রচার করলে স্বাভাবিক বিচারপ্রক্রিয়া ব্যহত হয়। আট পর্বে এই সিরিজে সালমান শাহ ও তার মাকে আপত্তিকর ও বিবৃত চরিত্রে উপস্থাপন করা হয়েছে, যা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। এমনকি সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদে উল্লেখিত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা সঙ্গেও সিরিজ সঙ্গতিপূর্ন নয়। যে কারণে রিটটি করা হলে আদালত ওই রুল দেন।’ তথ্য সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যানসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী।
তানিম রহমান পরিচালিত সিরিজে গোয়েন্দা কর্মকর্তা গোলাম মামুন চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। সিনেমায় তারকা অভিনেতার চরিত্রে পাওয়া গেছে ইয়াশ রোহানকে। আর সেই চিত্রতারকা মৃত্যুরহস্য উন্মোচনের দায়িত্ব পান গোলাম মামুন। ‘ফিরে আসার গল্প’, ‘বন্ধু নাকি শত্রু’, ‘চেনা যখন অচেনা’, ‘স্নেহের ছলনা’, ‘উত্থান-পতন’, ‘প্রণয়ের পালাবদল’, ‘পতনের প্রস্তুতি’ ও ‘হত্যা নাকি আত্মহত্যা?’
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনে সালমান শাহর বাসা থেকে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মামলা করেন সালমান শাহর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। দুই যুগ ধরে আদালতে ঝুলে থাকা মামলার প্রথমে তদন্তভার পায় পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), এরপর নানা সংস্থা ঘুরে ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত। মামলার রায় না হওয়ায় সালমান শাহকে হত্যা করা হয়েছে নাকি তিনি আত্মহত্যা করেছেন, ২৭ বছরেও সেই জট এখনো খোলেনি।


     এই বিভাগের আরো খবর